শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক ঃ
এই সময়ে বাদানুবাদের রাজনীতি কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতারা নানাধরণের কথা বলে আসছেন। তাদের এসব কথা বলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সরকার ভালো উদ্যোগগুলো যাতে বাধাগ্রস্ত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই তারা এসব কথা বলছে। অথচ এসময় বাদানুবাদের রাজনীতি কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সমসাময়িক বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন,‘পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সব রাজনৈতিক দল এই দুর্যোগে সরকারকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সোনিয়া গান্ধী অর্থাৎ কংগ্রেস সভাপতি ও বিরোধী কংগ্রেস জোটের চেয়ারপারসন চিঠি দিয়ে তাদের সরকারের নানা উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং এই বৈশ্বিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহযোগিতা করার জন্য চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। অথচ আমাদের দেশে বিএনপি এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের নেতৃবৃন্দ এই কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ’
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করার আগে ইউরোপ-আমেরিকার দিকে তাকাতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, “দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করার আগে ইউরোপ-আমেরিকা ও ভারত-পাকিস্তানের পরিস্থিতির দিকে তাকান, তাহলেই তাদের তুলনায় আমাদের পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন।”
দেশের গণমাধ্যম বিষয়ে মন্তব্যকারী কূটনীতিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অন্যের বিষয়ে বলার আগে নিজের দেশের প্রশ্নগুলো নিরসন করাই শ্রেয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সময়োচিত নানা পদক্ষেপের কারণে এখনও অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশে পরিস্থিতি ভালো। কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতিই তৈরি হতে পারে, মারাত্মক আকারও ধারণ করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে প্রতিদিন পরিস্থিতি অবহিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আহ্বানে সরকারের পাশাপাশি দলের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই প্রায় ১ কোটি মানুষের কাছে ত্রাণ ও নগদ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন এবং তা অব্যাহত রয়েছে।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আবার অনেককে দেখি গণমাধ্যমে খুব সোচ্চার। কিন্তু একমুঠো চাল নিয়েও জনগণের কাছে যাননি, মানুষের পাশে দাঁড়াননি। আর বিএনপিও কিছু ফটোসেশনের মধ্যই ব্যস্ত’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিকের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ সাতজন রাষ্ট্রদূত টুইট করে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিমধ্যেই তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যে, দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে তাদের এই টুইট করে কথা বলা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘনের শামিল।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় যে কূটনীতিকরা কথা বলেন, আমি তাদেরকে অনুরোধ করবো, তাদের স্ব-স্ব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও বিশ্বব্যাপী নানা প্রশ্ন আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু এবং বিভিন্ন কারাগারে বন্দিদের ওপর নির্যাতনে বিশ্বব্যাপী নানা প্রশ্ন আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর নির্যাতন এবং তাদের ওপর বেআইনি আচরণ নিয়ে বহুপ্রশ্ন বহুদিন ধরে বিশ্বব্যাপী আছে, যেগুলো নিরসন অনেক বেশি জরুরি বলে অনেকে মনে করেন’।
অন্য দেশের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার আগে নিজের দেশের ব্যাপারে যে প্রশ্নগুলো আছে সেগুলো নিরসন করাই বরং জনগণ তথা বিশ্ববাসী প্রত্যাশা করে বলে অভিমতও তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী।
সেই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের কথা বলা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত।’
সুত্রঃ যুগান্তর
Leave a Reply